ভালবাসি প্রকৃতি

ভালবাসি প্রকৃতি

Wednesday, August 15, 2018

কোরবানির পশুবাহী গাড়িতে চাঁদাবাজি রোধে চাই যুদ্ধ

সম্প্রতি একটা স্লোগান দিয়ে দেশে একটা যুদ্ধ হয়ে গেলো। স্লোগানটা ছিলো মাদকের বিরুদ্ধে চল যাই যুদ্ধে। সেই যুদ্ধে নেমে বিনা বিচারে অনেককেই হত্যা করা হয়েছে। আমি এধরনের হত্যাকান্ডের বিরোধী ছিলাম এখনও আছি। তবে যুদ্ধটাকে আমি সমর্থন করি অন্যভাবে। যুদ্ধটা হওয়া উচিত শত্রুদের বিচারের মুখোমুখি করার, মাদক নির্মূল করার। মাঝে মাঝে এ ধরনের যুদ্ধের প্রয়োজন আছে। এখন এমনই একটি যুদ্ধ প্রয়োজন কোরবানির পশুবাহী ট্রাক-ট্রলারে চাঁদাবাজীর বিরুদ্ধে। তবে এ যুদ্ধে চাঁদাবাজ ও তাদের গডফাদারদের ধরে আইনের হাতে সোপর্দ করা হোক, ক্রসফায়ারের নামে হত্যাকান্ড নয়। 

এবার কোরবানির ঈদ ২২ আগষ্ট। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে দেশে এবার ঈদুল আজহায় কোরবানিযোগ্য গবাদিপশু রয়েছে প্রায় ১ কোটি ১৬ লাখ। এর মধ্যে গরু-মহিষ ৪৪ লাখ ৫৭ হাজার এবং ছাগল-ভেড়া ৭১ লাখ। ২০১৬ সালে দেশে সব ধরনের পশু মিলিয়ে কোরবানির সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৩ লাখ। ২০১৭ সালে পশু কোরবানি হয় ১ কোটি ৫ লাখ। সে হিসাব অনুযায়ী এবার ৫ বা ১০ ভাগ কোরবানি বেশি হলেও ১ কোটি ১৬ লাখ পশু যথেষ্ট বলে ধারনা করা হচ্ছে।

এ বিশাল সংখ্যার পশু দেশের নানান জায়গায় কৃষকরা পেলে পুষে বড় করেছে। রাজধানীসহ দেশের বড় বড় হাটে নিয়ে বিক্রি করলে কৃষকরা ভালো দাম পাবে। সেই আশায় কৃষকরা পশুগুলো ট্রাকে করে সড়ক পথে ও ট্রলারে করে নদীপথে নিয়ে যাবে বিভিন্ন হাটে। দেশের চাঁদাবাজরা সেই সুযোগেরই অপেক্ষায় ওৎ পেতে আছে। কৃষকদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তাদের পশুবাহী যানের পথ রোধ করবে। গুণতে হবে মোটা অংকের টাকা নইলে এগুতে দিবে না। গাড়ির সাথে চাঁদাবাজরা দেশকেও এগুতে দেয় না। দেশে চাঁদাবাজির সঠিক পরিসংখ্যান হয়তো কারো কাছেই নেই। কিন্তু কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজরা কালেকশন করে বিনা পরিশ্রমে আয় করে ভাগবাটোয়ারা করবে।

চাঁদাবাজির সাথে যোগ হবে ছিনতাই, ডাকাতি ও চুরি। সারা বছর হারভাঙ্গা পরিশ্রম করে কৃষক যে টাকা আয় করবে মূহুর্তের মধ্যে তা ম্লান করে দেবে এই অশুভ শক্তি। এই অশুভ শক্তির কারনে বাড়বে পশুর দামও। তাই চাঁদাবাজ, ছিনতাইকারী, চোর, ডাকাত রুখতে চাই একটা যুদ্ধ। এ যুদ্ধে জয়ী হতে পারলে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালি হবে, কৃষকের হাত শক্তিশালী হবে, দেশ হবে সমৃদ্ধ। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উচিত হবে এবার অশুভ এ শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামার। তবে ক্রসফায়ারের নামে হত্যা নয়, আইনের আশ্রয়ে এনে বিচার করাই হবে সঠিক কাজ। আমাদের যোদ্ধারা চাইলেই পারে। দেখিয়ে দিক তাদের দেশপ্রেম, যোগ্যতা।    

No comments:

Post a Comment