ভালবাসি প্রকৃতি

ভালবাসি প্রকৃতি

Thursday, March 29, 2018

সাবধান !

ধর্ষন বেড়েছে, বেড়েছে প্রচার
প্রচারে জেনেছি, হলো কতটা প্রসার।
পারছি না রুখতে, থামছে না কেন?
ধর্ষন এখন, উৎসব যেন!
নৈতিক অবক্ষয়, না পর্ণের প্রভাব?
বদলাচ্ছেনা যেন, ধর্ষকের সভাব।
চেষ্টা চলছে, থামানোর জন্য
ফলাফল দেখি, শুধুই শুন্য।
ধর্ষনের পরপরই হচ্ছে আপোষ
ধর্ষক-ধর্ষিতা মেনে যায় পোষ।
পোষ মানে প্রশাসন, মানে দেখ সালিস
মাথায় হয়েছে ঘা, মলম পায়ে হচ্ছে মালিশ।
দোষ দেই চলনের, দোষ দেই পোষাকের
দোষ দেই পুলিশ আর দোষ দেই শাসকের
দোষ ঢুকে গেছে আজ ধর্ষকের মনে
মুক্তা ছরাচ্ছি সবাই আজ উলু বনে!
সামাজিক, নৈতিক অবক্ষয় কেন?
সেদিকে কারোরই নজর নেই যেন!
বলে কবি, লাগাম ধরতে হবে এখনি
নইলে সমাজের কপালে আছে শনি!!

Monday, March 26, 2018

হে বীর

আমি যুদ্ধ দেখিনি, আমি বিজয় দেখিনি
আমি এখন ভোগ করছি বিজয়ের স্বাদ।

দেশে যখন প্রচন্ড লড়াই, একটি পতাকার জন্য
দেশে যখন প্রচন্ড লড়াই, একটি স্বাধীন মানচিত্রের জন্য
দেশে যখন প্রচন্ড লড়াই, মাথা উচু করে দাড়াবার জন্য
আমি তখন ভূমিষ্ঠই হইনি
আমার জন্ম স্বাধীনতার সাত বছর পর।

এর পর আমি আস্তে আস্তে হাটতে শিখেছি
একটু একটু কথা বলতে শিখেছি
দাদির কোলে বসে গল্প শুনেছি
গল্পগুলো মনে ধারণ করতে শিখেছি, বুঝতে শিখেছি
তখন বুঝেছি, স্বাধীনতার মানে কি, কেন করেছে যুদ্ধ।

অনেকেই বলে, শোনা কথা বিশ্বাস করতে নেই
আমি বলি যুদ্ধের কথাগুলো, যোদ্ধার কথাগুলো
বিজয়ীনির কথাগুলো, ধর্ষিতা বীরঙ্গনার কথাগুলো
লড়াকুর কথাগুলো, জীবন বাজীকরের কথাগুলো
কি’করে অবিশ্বাস করি!

একটি ডাকে যখন মানুষ পাখির মত ঝাপিয়ে পড়ে
অস্তিত্ব রক্ষায় যখন মানুষ অকাতরে প্রাণ দেয়
দিনের পর দিন খেয়ে, না’খেয়ে, নিদ্রাহীন লড়ে যায়
আমি সেই লড়াকু বীরের কথা কিভাবে অবিশ্বাস করি!

পাকিস্তানী হানাদার এদেশে এসেছিলো
ধর্মের লেবাশ পড়া হিংশ্র জানোয়ারের বেশে
ধর্মীয় মিলের ছুতোয় অনেকেই দিয়েছে সহচার্য
জানোয়ারের লোমশ হাতে, নিজের কন্যাকে
পরশীর কন্যাকে, আর মালাউনের কন্যা হলেতো কথাই নেই!
ক্যাম্পে ঠেলে দিয়ে বাইরে বসে শুনেছে ভায়োলিনের করুন সুর
বিনিময়ে জুটেছে লুটপাটের অনুমতি, জানোয়ারের উচ্ছিষ্ট ক্ষমতা
রাজাকার, আলবদর, পাকি দোসররা হা করে ছিলো
জানোয়ারের বিষর্জিত মুত্র পানের আশায়, চাতকের মত।

একটি সভ্য জাতি কখনো কি অসভ্য হতে পারে?
একটি অসভ্য জাতি কি কখনো সভ্য হতে পারে?
আজো মসজিদে মসজিদে বোমা মাড়ে, স্কুলে বোমা মারে
সাধারণ মানুষের জীবন বিপন্ন করে পাকি জানোয়ারেরা
ওদের হাত থেকে বাদ যায় না কিশোরী মালালারা
ওরা আজো ধ্বংসলীলায় মেতে আছে নিজভূমে
মোটা আটার রুটি আর ছাগলের মাংস খেয়ে
বরবর জাতি বড় বড় করছে হিংশ্র দন্ড
মানবী না পেলে মুরগী আর বড়কীর উপর চালায়
পাষবিক নির্যাতন, ধর্ষন, মিটায় কামত্তেজনা
সেই জাতি ভালো হবে না শত বছরেও!
যেমনটি হয়নি ওদের দোসর, ধর্মের লেবাসীরা এদেশে!

জানোয়ারদের পরাস্ত করে স্বাধীনতা এনেছিলে হে বীর
আমরা তোমাদের ভুলিনাই, ভুলবো না
দোসরদের সাথে আজো আমরা লড়ছি
তোমাদের দেখানো পথে হাটছি আমরা
আমরা যে বীরের জাতি, লড়ছি আমরাও
লড়ে যাব, যুদ্ধ চালিয়ে যাব নিরন্তর
চলবোই, যতক্ষণ না লক্ষে পৌছাই।
তোমরা যে আমাদের প্রেরণার হাতিয়ার।

Thursday, March 22, 2018

কীর্তিনাশা প্রকাশ কর্তৃক প্রকাশিত লেখক পরিচিতিঃ আসাদুজ্জামান জুয়েল

রওশনারা বেগম ও আবদুর রশীদ খানের কনিষ্ঠ পুত্র আসাদুজ্জামান জুয়েল। ১৯৭৮ সালের ০৫ জুন শরীয়তপুর জেলার পালং থানা পালং গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষা জীবন শুরু মায়ের হাত ধরে। তুলাসার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন।পরে পালং তুলাসার গুরুদাস সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি; শরীয়তপুর সরকারী মহাবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি; জাজিরা ডিগ্রী কলেজে থেকে বাণিজ্য বিভাগ হতে বি.কম পাস করার পর প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদ হতে এলএল.বি ও এলএল.এম সম্পন্ন করেন। প্রতিটি ক্যাম্পাসেই কেটেছে তার মধুর দিনগুলো। ২০০৯ সালের ০৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে আইনজীবী হিসাবে তালিকাভূক্ত হয়ে ২৩ ডিসেম্বর ২০০৯ ঢাকা বার এসোসিয়েশনে সদস্যভূক্ত হন। পরবর্তীতে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১০ নিজ জেলার শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যভূক্ত হয়ে বর্তমানেও আইন পেশার সাথে যুক্ত আছেন। ঢাকা জেলা আইনজীবী সমিতি, শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতি ও শরীয়তপুর জেলা ট্যাক্সেস বার এসোসিয়েশনের সদস্য হিসাবে আইন পেশায় নিয়োজিত।
সাংবাদিকতা ও লেখালিখি করেন মনের টানে। একই সাথে আইন পেশা ও সাংবাদিকতায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে নিরন্তন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কর্ম জীবন শুরু লেখালিখির মাধ্যমে। দৈনিক ভোরের কাগজ দিয়ে সাংবাদিকতার শুরু। এর পর দৈনিক প্রথম আলো, দৈনিক কালের কন্ঠ, দৈনিক গণমুক্তি সহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ও সাপ্তাহিকে কাজ করেছেন।
প্রবাসীদের সুখ-দুঃখ নিয়ে লেখা আসাদুজ্জামান জুয়েলের প্রথম উপন্যাস ‘যেমন আছি লন্ডনে’ প্রকাশিত হয় ২০১২ সালের একুশে বই মেলায়। 
‘পথের পদ্য-১ কোলকাতা ভ্রমণঃ জীবণে প্রথম কিছু’ নামে একটি ভ্রমণ কাহিনী,
‘পথের পদ্য-২ পথের ভাবনাগুলো’ নামে একটি প্রবন্ধ সংকলন, 
‘হৃদয়ের শব্দক্ষরণ’ নামে একটি কাব্য গ্রন্থ প্রকাশের অপেক্ষায় আছে। এছাড়াও
‘পথের পদ্য-৩, শরীয়তপুরের পথে পথে’ নামের আরো একটি বই প্রকাশের জন্য কাজ করছেন।

লেখালিখি করেন বিভিন্ন ব্লগে। আসাদুজ্জামান জুয়েলের নিজস্ব ব্লগ www.asadjewel.blogspot.com এ ‘সরল মানুষ-সহজ কথা’ নামে কলাম লেখেন। এছাড়া www.somewhereinblog.net ব্লগ সহ বেশ কয়েকটি ব্লগে নিয়মিত লেখালিখি করেন।
শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসাবে তিনবার ও লাইব্রেরী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, শরীয়তপুর জেলা ইউনিটের জীবন সদস্য। শরীয়তপুর জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির নির্বাচনে দুইবার নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন। প্রগতি লেখক সংঘ, শরীয়তপুর জেলা শাখার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্বরত আছেন।
সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড, মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, কর্মসংস্থান ব্যাংক, আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক শরীয়তপুর এর আইন উপদেষ্টা হিসাবেও কর্মরত আছেন। গরীব-দুঃখীদের মামলা পরিচালনার জন্য জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা শরীয়তপুর জেলা শাখার প্যানেল আইনজীবী হিসাবে দুস্থ্যদের আইনগত সহায়তা প্রদান কাজে নিষ্ঠার সাথে জড়িত আছেন। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন), শরীয়তপুর জেলা শাখার সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। শিক্ষানিকেতন কর্ম কেন্দ্রীক পাঠাগার, শরীয়তপুরের কার্যনির্বাহী সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘদিন।
২০০৯ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ও অস্ট্রেলিয়ান বার এসোসিয়েশনের উদ্যোগে ইনটেনসিভ ট্রায়েল এডভোকেসী ওয়ার্কশপ, ২০১০ সালে এশিয়ান লিগ্যাল রিসোর্স সেন্টার এর উদ্যোগে হিউম্যান রাইটস এন্ড রুল অফ ‘ল’, ২০০২ ও ২০১০ সালে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট এর উদ্যোগে শিশু ও নারী বিষয়ক রিপোর্টিং কর্মশালা, ১৯৯৯ সালে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর আয়োজিত কম্পিউটার ট্রেড প্রশিক্ষণ, ২০১০ সালে ইউএসএইড-প্রগতি-কালেরকন্ঠ আয়োজিত দুর্নীতি বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরী ও তথ্য অধিকার আইন বিষয়ক প্রশিক্ষণসহ পেশাগত উৎকর্ষ সাধনের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।
লেখালিখি ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে নিজেকে জড়িয়ে সমাজ সংস্কারে একজন কর্মী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন।
আসাদুজ্জামান জুয়েলের অর্ধপ্রাণ তার কন্যা রওশন আসাদ প্রিয়ন্তী। সহধর্মীনি মুনমুন সুলতানা লুনা পেশায় শিক্ষিকা। দুই বোন রেহানা আক্তার রেখা এবং কহিনুর আক্তার শিখা এবং একমাত্র ভাই মোহাম্মদ রুহুল আমীন খান আজাদ একজন প্রবাসী। আসাদুজ্জামান জুয়েলের বাবা আবদুর রশীদ খান শরীয়তপুরের একজন ভাষা সৈনিক।
তথ্য সূত্রঃ http://www.somewhereinblog.net/blog/asadjewel

কাপ্তাই...

কাপ্তাই লে‌কের জল
শান্ত টলমল
এতটাই শান্ত যেন ম‌নে হয় 
হা‌রি‌য়ে‌ছো মল
‌রি‌নি ঝি‌নি বা‌জে না‌কো
‌নিরব নিথর
দু'পার বাধা‌নো যেন
শান্ত পাথর
ভাঙ্গন ছোয় না যেন
হৃদ‌য়ের তম
মানুষ দেখ‌তে আ‌শে
‌দেখ কত শত।

নাদা‌নের পীর বাবা

পীরের পিরপিরানি
সেকথা আমি জানি
বোঝে না যারা নাদান
পীরের কাছে তারাই যান।
পীর বাণিজ্যে লাভ বেশি
নাদানেরা গিয়ে খুশি
পশু পেলে পীর খুশি
নাদানরা খায় খইল ভূষি।
একেক পীরের একেক বানী
সবার মধ্যেই শয়তানী
অন্ধরা গিয়ে খায় ধোকা
নাদানেরা তাইতো বোকা।
হাসর কালে তোমার পীরে
একবারও চাইবেনা ফিরে
ছুটবে তিনি নিজের জন্য
তার খাতা যে পুরাই শুন্য।
পীরের কাছে না গিয়ে
পরে থাকো কোরআন নিয়ে
সুপারিশ চাও? বলছে কবি-
করবে মোদের শেষ নবী।

চাক‌রি‌রে !

বা‌ড়ি থে‌কে ডে‌কে এ‌নে
‌দি‌তো আ‌গে চাক‌রি
পুড়‌তো না কাঠ খড়
পুড়‌তো না লাক‌ড়ি।
চাক‌রি চাই‌লে এখন
ক‌রে দুর দুর
আ‌বেদন চাই‌লে
হ‌য়ে যায় ভুর।
চাক‌রির বাজারটা
এখন বড়ই চড়া
পায় না মেধাবী
আর যারা আধ মরা।
পা‌চ্ছে যার আ‌ছে
ক্ষমতা আর টাকা
হাজার লি‌খেও দে‌খো
অ‌নে‌কের খাতা ফাকা।
দর দাম উঠ‌ছে
জ্যা‌মি‌তিক হা‌রে
দুঃ‌খের এ কথা ব‌লো
ব‌লি আজ কা‌রে?
যার কা‌ছে বল‌বো সেই
‌ঘো‌‌রে দাতার পা‌ছে
আমা‌দের যাওয়ার কি
যায়গা আর আ‌ছে?
‌মেধা আর যোগ্যতা
ক‌রে যাচাই
প্রার্থ‌ী‌কে কর‌বে
কর্তারা বাছাই।
এই দে‌শে সেই দিন
আস‌বে আর ক‌বে
টাকা নয় মেধার গু‌ণে
চাক‌রিটা হ‌বে?!

কষ্ট

আকাশ ভরা জোৎস্নার আলো
মনে কষ্টের পাহাড়
ভাল্লাগে না জোৎস্নার আলো
ভাল্লাগে না আহার।
ভাল্লাগে না প্রকৃতি আজ
ভাল্লাগে না পাখি
হৃদয় ভরা ব্যাথার পানি
ঝড়ছে দিয়ে আখি।
ব্যথার বিষে কাতর আমি
প্রাণ যে ওষ্ঠাগত
বিনিদ্র রাত কাটাই আমি
হাজার শত শত।
সব রোগেরই ঔষধ আছে
ব্যথার ঔষধ নাই
আমার ব্যথা বোঝার মত
সঙ্গী কোথায় পাই?
ভালোবাসি পরান দিয়ে
হৃদয় উজার করে
বুঝলাম না কেমনে ঢুকলো
কষ্ট আমার ঘরে।
হৃদয় ছিলো হালকা আমার
উড়তো তুলার মত
কেমন করে দিলে তুমি
এই হৃদয়ে ক্ষত?
আশীষ আমার তবুও তুমি
আনন্দেতেই থাকো
বিধাতা তুমি কষ্ট থেকে
ও'কে দূরে রাখো।

Monday, March 5, 2018

একটি চত্তরের নামকরণ ও শরীয়তপুর পৌরসভার উদ্ভট চিন্তা

আমাদের প্রাণের জেলা শরীয়তপুর। ধন সম্পদে, মানব সম্পদে, শান্তিতে, শিক্ষায়, গুণিজনে সমৃদ্ধ একটি জনপদের নাম শরীয়তপুর। আমাদের এতদ অঞ্চলের প্রতি একসময় বর্গিদের পরবর্তীতে হানাদারদের যেমন বদ নজর ছিলো তেমনি বর্তমানেও তথাকথিত বর্গিদের-হানাদারদের বদ নজর আছে। পূরাকালেও যেমন বর্গিদের-হানাদারদের সহযোগীতার জন্য এক শ্রেণীর দোসর ছিলো, তেমনি বর্তমানেও আছে।
আমাদের শরীয়তপুর জেলার বিশেষ করে শরীয়তপুর পৌরসভার অভ্যন্তরের রাস্তাঘাটগুলোর যেমন বেহাল দশা তেমনি নাই কোন নামকরণ। এ দুটি কাজই করার কথা শরীয়তপুর পৌরসভা কর্তৃপক্ষের। রাস্তার বেহাল দশার কথা না হয় সহ্য করা যায় কিন্তু রাস্তা ঘাটের, চত্তরের, মোড়ের নামকরণ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা কি পৌরবাসী হিসাবে সহ্য করা যায়? উদ্ভট কোন নামকরণ জনগণ সহ্য করবে না।
কথাগুলো আসতো না। আমরা পৌরবাসী সব বিষয়েই ঘুমের মধ্যে আছি। কোন অধিকার নিয়ে আমরা কথা বলি না। আর বলার জায়গাও আছে বলে মনে হয় না। যে জায়গা আছে সেখানে কথা বলে অতীতেও কেউ কর্তৃপক্ষের ঘুম ভাঙ্গাতে পারেনি বর্তমানেও পারবে না বলেই আমার ধারনা। তবুও আজ আর প্রতিবাদ না করে পারা গেলো না। 
সম্প্রতি শরীয়তপুর পৌরসভা একটা মহৎ কাজ হাতে নিয়েছে! এতটাই মহৎ যে আমরা উচ্ছসিত হওয়ার পরিবর্তে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হচ্ছি। মহৎ কাজটা হলোঃ ভাষা সৈনিক ডাক্তার গোলাম মাওলা গণ গ্রন্থাগারের সামনের চত্তরটাকে কোন এক অর্বাচিনের নামে ‘সাইবিতা চত্তর’ নামকরণ করে ফলোক উন্মোচন করা!
শরীয়তপুর জেলার কোর্টের মোড়ে একসময় বিশালাকায় এক কড়ই গাছ ছিলো। রাস্তা প্রসস্ত করণের নামে গাছটিকে হত্যা করা হয়েছে প্রকাশ্য দিবালোকে। রাস্তা প্রশস্তকরণের জন্য গাছ তো কাটতেই হবে, সবাই একথা বলবে জানি। কিন্তু আমার মতামত ভিন্ন। গাছটাকে বাঁচিয়ে রেখেও রাস্তা প্রসস্ত করা যেতো। কিভাবে? গাছটা থাকতো মাঝখানে। গাছের পশ্চিম দিকে রাস্তা প্রসস্ত হতো আর গাছের পূর্ব দিকেও প্রসস্ত হত। এভাবে করার মত সরকারের যথেষ্ট জায়গাও ছিলো। কিন্তু সেটার কথা কেউ ভাবলো না। একটি গাছের জন্য আমাদের প্রকৌশলীদের পরিকল্পনা করার মত মানসিকতা না থাকাই এর জন্য দায়ী বলে আমি মনে করি। যা হোক। কালের পরিক্রমায় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় শরীয়তপুর জেলায়ও একটি গণ গ্রন্থাগার স্থাপন করা হলো। গ্রন্থাগারটি করা হলো কড়ই তলার পশ্চিম পাশে। এবার গ্রন্থাগারের নামকরণের পালা। শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার কৃতি সন্তান ভাষা সৈনিক ডাক্তার গোলাম মাওলার নামে নামকরণ করা হলো গণ গ্রন্থাগারটির। অবশেষে ‘ভাষা সৈনিক ডাক্তার গোলাম মাওলা গণ গ্রন্থাগার’ নামে সমৃদ্ধ হলো গ্রন্থাগারটি।
শরীয়তপুর পৌরসভা এই মহান ব্যক্তির নামে গড়া গণ গ্রন্থাগারের সামনের চত্তরের নামকরণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার ক্ষেত্রে কোন সভা, সমাবেশ, গুনিজণদের নিয়ে কোন প্রকার আলাপ আলোচনা না করে ভাষা সৈনিক ডাক্তার গোলাম মাওলা গণ গ্রন্থাগার এর সামনের চত্তরকে ‘সাইবিতা চত্তর’ নামকরণ করার উদ্যোগ নিয়েছে। উদ্যোগের কথা জানাজানি হলে শরীয়তপুরের সচেতন জনগণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ শুরু করেছে। প্রতিবাদী সকলের প্রতি আমার সহমত ও সমর্থন আছে এবং থাকবে। এমন একটি ইস্যু নিয়ে আমাদের প্রতিবাদ করতে হবে তা কখনো ভাবিনি!
শরীয়তপুর পৌরসভা কিংবা যে কোন পৌরসভায় কোন রাস্তা, ঘাট, চত্তরের নামকরণের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় নজরে রাখতে হয়। সেই ব্যক্তির নামেই চত্তর বা রাস্তার নামকরণ করা যায় যেই ব্যক্তির এ শহরে অতীত কোন অবদান আছে বা অতীতে কোন গুণের স্বাক্ষর রেখেছেন। পৌরসভা সাইবিতা চত্তর নামে যে চত্তরের ঘোষণা করছে সেই ব্যক্তির শরীয়তপুর জেলায় অবদান কি, তার গুন কি, সে কিসের জন্য বিখ্যাত তা শরীয়তপুর বাসী কিছুই জানেনা। শরীয়তপুর পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে সেই ব্যক্তি কি গুণের কারনে গুনিজন সেটা কতর্তৃপক্ষই ভালো বলতে পারবে। ঐ গুনিজনের গুণ নিয়ে আমরা কোন তর্কেও যেতে চাই না। আমাদের কাছে মনে হয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ নিজস্ব কোন লাভের কারনে এই নামকরণ করছে। ঐ গুণিজনের কাছে আমাদের পৌরকর্তৃপক্ষের কি এমন দায়বদ্ধতা, কিসের প্রতিশ্রুতি পূরণের চেষ্টা সেটা আমাদের বোধগম্য নয়।
শরীয়তপুর বাসীর প্রাণের দাবী শরীয়তপুর জেলার ভাষা সৈনিক ডাক্তার গোলাম মাওলা গণ গ্রন্থাগার এর সামনের চত্তরের নামকরণ হোক ‘গোলাম মাওলা চত্তর’ অথবা ‘রথীন্দ্র কান্ত ঘটক চত্তর’ অথবা শরীয়তপুরের অন্য কোন গুণিজনের নামে।
আমি যে দুটি নাম প্রস্তাব করলাম তাদের গুণের এবং শরীয়তপুরের প্রতি তাদের অবদানের কথা লিখে শেষ করা যাবে না। তারপরেও কয়েকটি কথা না বললেই নয়। ডাক্তার গোলাম মাওলা আমরা যে ভাষায় কথা বলি, আমি আজ যে ভাষায় লিখলাম সেই ভাষা এনে দিয়েছেন। তিঁনি শরীয়তপুরের নামকে দেশে বিদেশে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আর রথীন্দ্র কান্ত ঘটক চৌধুরী একাধারে একজন কবি, সমাজ সেবক, শরীয়তপুর জেলা গঠনে তার ভূমিকা, শরীয়তপুর পাবলিক লাইব্রেরী স্থাপনে তার ভূমিকা, শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষ স্থাপনে তার ভূমিকা এমন হাজারো ভূমিকা রাখার জন্য তাঁর নামেও এই চত্তরের নামকরণ করা যেতে পারে।
শরীয়তপুর পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের দাবী অনতি বিলম্বে উদ্ভট চিন্তা থেকে সরে এসে শরীয়তপুর জেলার গুণিজনদের নামে নামকরণ করুন। ভালো চিন্তা, ভালো কাজ করতে না পারলেও উদ্ভট চিন্তা না করাই ভালো! নাম দিলেই নামকরণ হয় না। আমরা না ডাকলে নামের কোন মাহাত্ম থাকবে না। সব শেষে একটা কথাই বলতে চাই, নিজের বাপ-মাকে ভাত দেয়ার মুরোদ নেই দুঃসম্পর্কের তালইর নামে শ্রাদ্ধ করা বন্ধ করুন।