ভালবাসি প্রকৃতি

ভালবাসি প্রকৃতি

Thursday, March 29, 2012

বিদায় জানানো হলো না : সহযাত্রী হয়ে গেলেন এক পরিবারের ৫ জন


আমেরিকা প্রবাসী শামীম ফকির। দেড়মাস আগে স্ত্রী পলিকে নিতে দেশে আসেন। রাতের ফ্লাইটে আমেরিকা যাওয়ার কথা তাদের। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস। বিদেশ নয়, চলে গেছেন না ফেরার দেশে। আর বিদায় জানাতে যারা ছিলেন সাথে তারাও হলেন সহযাত্রী। শামীম, স্ত্রী পলি, পলির মা পলির বড় বোন জামাই নাহিদ, নাহিদের কন্যার লাশ উদ্ধার করেছে ডুবুরিরা।
ঘটনার রাতে সুরেশ্বর ঘাট থেকে এমভি শরীয়তপুর-১ লঞ্চের কেবিনে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় ভেদরগঞ্জ উপজেলার কার্তিপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলী ফকিরের ছেলে শামীম ফকির (৪০) ও তার স্ত্রী পলি। বিদায় জানাতে সঙ্গী হন শাশুরি, ভগ্নিপতি ও ভায়রাসহ ৬ জন। বিদায় জানানো নয় সহযাত্রী হয়ে গেল সঙ্গী ৫ জনই। কার্তিকপুর মোহাম্মদ আলী ফকিরের বাড়িতে এখন শোকের মাতম।
রামভদ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিপ্লব শিকদার জানান, ১৪/১৫ বছর ধরে আমেরিকা প্রবাস জীবন যাবপ করছেন শামীম ফকির। বছর তিনেক আগে ঢাকার লালবাগের মেয়ে পলির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। স্ত্রীকে আমেরিকা নিতেই মূলত তার বাংলাদেশে আসা। স্ত্রী পলির ভিসা হচ্ছিল না। দেড় মাস আগে স্ত্রী পলির জন্য ভিসা হাতে পেয়ে আর দেরি করেনি শামীম। স্ত্রীকে নিয়ে যেতে ভিসা নিয়ে দেশে আসেন। গ্রামের বাড়ি কার্তিকপুর থেকে বিদায় নিয়ে শাশুরী, ভগ্নিপতি, ভায়রা, ভায়রাবেটিকে নিয়ে ঢাকা রওয়ানা হন রাতের লঞ্চে। সকালে ঢাকা পৌছে বিশ্রাম। তারপর রাতে একটি ফাইটে আমেরিকা চলে যাবেন সস্ত্রীক শামীম। কিন্তু ৫ জনকে সহযাত্রী করে চলে গেলেন শামীম।
একমাত্র বেঁচে যাওয়া ভগ্নিপতি দুলাল দেওয়ান জানান, কিভাবে যে লঞ্চ থেকে বের হয়েছে তা বলতে পারছে না। কথা বলতে গিয়ে গলা আটকে যায় দুলালের।
শামীমের মৃত্যুর ঘটনায় এলকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। স্বজনদের বিলাপ আর আহাজারিতে এলাকার পরিবেশ ভারি হয়ে উঠে। সাধারণ মানুষের এ কান্না আমার দেশের কর্তা ব্যক্তিদের কানে যায় না।
তিন দিন পর বিকালের দিকে ডুবুরিরা শামীম, স্ত্রী পলি, শাশুরী, ভায়রা নাহিদ ও তার কন্যার লাশ উদ্ধার করে। লাশ নিয়ে কার্তিকপুরের আসে স্বজনরা। কান্নার সাথে চলছে লাশ দাফনের প্রস্তুতি।
এ আমার দেশ। আমরা কবে পাব নিরাপদ পথ?

চলে গেলেন শরীয়তপুরের বিশিষ্ট আইনজীবী ও সমাজ কর্মী অ্যাডভোকেট আবদুর রাজ্জাক সিকদার

undefined

শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট শরীয়তপুর শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুদর রাজ্জাক সিকদার (৭২) আজ বুধবার ভোরে ঢাকার একটি হাসপাতালে ইন্তিকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি......রাজিউন)। মৃত্যুকালে স্ত্রী, এক কন্যা, ৩ পুত্রসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। আজ বুধবার বাদ আছর শরীয়তপুর জেলা আদালত চত্তরে জানাজা শেষে মাদারীপুর জেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের চরগোবিন্দপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে। তাঁর মৃত্যুতে শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতি, শরীয়তপুরের বিশিষ্ট সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

: বর্ণিল জীবনের অ্যাডভোকেট আবদুর রাজ্জাক সিকদার :
দেশের সাধারণ মানুষের সকল অধিকার ও ন্যায্য দাবী আদায়ের আন্দোলনের অগ্র সৈনিক শরীয়তপুরের বিশিষ্ট আইনজীবী শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুর রাজ্জাক সিকদার ১৯৪১ সালের ২৮ ফেব্র“য়ারি মাদারীপুর জেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের চরগোবিন্দপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আলহাজ্ব খাদেম হোসেন সিকদার, মাতার নাম মরহুমা নূর জাহান বেগম। নিজ গ্রামে প্রাথমিক শিা শেষে মাদারীপুর ইউনাইটেড ইসলামিয়া হাই স্কুল হতে মেট্রিক, মাদারীপুর নাজিমউদ্দিন কলেজ হতে আইএ এবং ঢাকার তৎকালীন কায়েদে আজম কলেজ (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী কলেজ) হতে বিএ পাশ করেন। এর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে এলএল.বি পাশ করেন।
কর্মজীবনের প্রথমে তিঁনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন। ১৯৭৫ সালে তিঁনি আইনজীবী হিসেবে যোগদান করেন। ঐ সময় হতে তিনি শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাথে যুক্ত হন।
ছাত্র জীবনে অ্যাডভোকেট আবদুর রাজ্জাক সিকদার ছাত্র ইউনিয়নের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তিঁনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ভাসানী) মাদারীপুর মহকুমার বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন।
আবদুর রাজ্জাক সিকদার শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, শরীয়তপুর জেলা বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট শরীয়তপুর শাখার সভাপতি, নজরুল একাডেমি শরীয়তপুর শাখার সভাপতি, তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ বন্দর ও জাতীয় সম্পদ রা কমিটির শরীয়তপুর জেলা শাখার আহবায়ক, উদীচী শরীয়তপুর জেলা সংসদ ও খেলাঘর শরীয়তপুর এর উপদেষ্টা, সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন শরীয়তপুর জেলা শাখার সভাপতি, ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটি শরীয়তপুর জেলা শাখার আহবায়কসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব পালন করেন।