ভালবাসি প্রকৃতি

ভালবাসি প্রকৃতি

Wednesday, August 1, 2018

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ভাষাগুলো কার । এ ভাষা আমাদের সন্তানের হতে পারে না!

সম্প্রতি ঢাকার এয়ারপোর্ট সড়কে একটি মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনা ঘটে যায়। যদিও এটাকে দূর্ঘটনা বলা ঠিক হবে না। একদল অদক্ষ চালক একে অপরের সাথে প্রতিযোগীতায় মেতে একটি বাস রাস্তায় দাড়িয়ে থাকা স্কুল থেকে বাসয় যাওয়ার জন্য অপেক্ষারত শিক্ষার্থীদের উপর তুলে দেয়। এতে দুটি তাজা প্রাণ ঝড়ে যায় মূহুর্তের মধ্যে। আরো অনেকেই আহত হয়।

সহপাঠীদের হারিয়ে শোকে কাতর ছাত্র-ছাত্রীরা নেমে আসে রাস্তায়। শুরু হয় এক অভাবনীয় আন্দোলন যাতে সমর্থন দেয় বিবেকবান সকল মানুষ। আর আন্দোলনের আগুনে এক বালতি হাসিমাখা ঘি ঢেলে দেন শ্রমিক ফেডারেশন নেতা মন্ত্রী শাহজাহান খান। তার হাসিতে যা হবার তাই হলো। আন্দোলন হলো আরো বেগবান। এই পর্যন্ত যা ঘটছে তার সবই ঠিক আছে। কিন্তু কিছু ছাত্র-ছাত্রী দেখলাম হাতে লেখা পোষ্টার নিয়ে দাড়িয়ে আছে। আবার কেউ কেউ রাস্তায় লিখে রেখেছে। কি লিখে রেখেছে সেটা ভাষায় প্রকাশের অযোগ্য।
মন্ত্রীর হাসি যেমন আন্দোলনে ঘি ঢেলে আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করিয়েছে তেমনি ছাত্র-ছাত্রীদের এমন লেখা এবং এমন ভাষা আন্দোলনে পানি ঢেলে দিয়েছে, ঘৃণার পাত্র-পাত্রী হয়েছে।
আসলে অনেকেই ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছেন। আবার আমার এই লেখাটা যারা পড়ছেন তাদের অনেকেই হয়তো দেখেননি। তাই তাদের উদ্দেশ্যে কিছু শব্দ উজ্জ রেখে লিখছি-
এক ছাত্রীর হাতে একটা কাগজে লিখা-পুলিশ কোন চ্যা... বা...
একদল ছাত্রের হাতে-কমরেড, রাজনীতি মেধায় লাথি মারছে....রাজা আছে নীতি নাই....নেতা চো.. টাইম নাই।
এক ছাত্রী হাতে নিয়ে দাড়িয়ে আছে, তাতে লেখা-লাঠির ভয় দেখাবে না....লাঠি একদম ভরে দেব..
কিছু ছাত্র-ছাত্রী দাড়িয়ে আছে আবার কেউ কেউ লিখছে। সেখানে লেখা আছে-লাঠি চার্জ চু... না...।আরেক জায়গায় লেখা-পুলিশ কোন চ্যা...বা....
এক ছাত্র কাগজে লেখা পোষ্টার নিয়ে বসে আছে। লেখা-মদ খাবা আর পুলিশ চো...বা..

এবার বলুন এই ভাষা কি আমাদের সন্তানের হতে পারে! আমাদের সন্তানরা স্কুল-কলেজে গিয়ে কি শিখছে? এর দায়ই বা কার। এর দায় হতে আপনি, আমি কি এড়িয়ে যেতে পারি। এগুলোকি ছাত্র-ছাত্রীদের ভাষা হতে পারে? তারা শিক্ষা নিচ্ছে। যে পর্যায়ে আছে তাতে তারা শিক্ষিত। কেউ কেউ এখান থেকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পাবে, কেউ হবে শিক্ষাবিদ, কেউ হবে বিজ্ঞানী, কেউ হবে লেখক। তাদের যে ভাষা তা এখন অসভ্য লোকেরাও ব্যবহার করে না। আমরাতো তাদের সভ্য জগতের লোক ভাবি, তারাইতো আগামীর সভ্য জাতি। কিন্তু তাদের হাতের লেখা দেখে খুবই হতাশ হতে হয়। আরেকটা কথা না বললেই নয়। হাতের লেখার শ্রী ও ভালো না। যদিও ভালো ছাত্র হতে, ভালো মানুষ হতে হাতের লেখা ভালো হতে হয় না। তবুও তাদের লেখার চর্চা দেখে মনে হচ্ছে তাদের মেধার জোরও কম। নইলে এমন লেখা কিভাবে লেখে?

আমি কোন ভাবেই ছাত্রদের এ আন্দোলনের বিরুদ্ধে নই। তবে তাদের এমন আচরন দেখে হতাশ। এর ভেতর আমরা ভালো ছাত্রদের কর্মকান্ডও দেখেছি। অনেক ছাত্র হাতে ঝাড়ু নিয়ে রাস্তায় পড়ে থাকা কাচের টুকরো সরাচ্ছে, রাস্তা পরিস্কার করছে। অনেকে ভালো ভালো কথা লিখে দাড়িয়েছে, যেমন-‘যদি তুমি ভয় পাও, তবে তুমি শেষ। যদি তুমি রুখে দাড়াও, তবে তুমি বাংলাদেশ’। এমন কথা দেখলে মনে সাহস জাগে, ভালো লাগে। আসলে ভালো ছাত্রগুলোর শান্তিপূর্ণ আচরণ, ভালো কর্মকান্ডই তাদের আন্দোলনকে সকলের কাছে পৌছে দিবে এবং সমর্থন কুড়াবে।

No comments:

Post a Comment