ভালবাসি প্রকৃতি

ভালবাসি প্রকৃতি

Sunday, February 25, 2018

পিতার পক্ষে সম্মাননা গ্রহণ ও পুত্র হিসাবে আমি গর্বিত

আমার পিতা আবদুর রশিদ খান। বয়সের ভারে নানা সমস্যার কারনে আজ সে সজ্জাসায়ী প্রায়। বিছানা থেকে উঠে বসতে পারে, খাওয়া দাওয়া নিজেরটা নিজেই করতে পারে, আবার নিজে নিজেই শুতে পারে। এতটুকু পারাটাকেই ভালো আছেন বলে আমি নিজেকে শান্তনা দেই। সর্বপরি বাবা আমাদের মাঝে আছেন এটাই সবচাইতে বড় প্রাপ্তি। মা দীর্ঘদিন হলো আমাদের ছেড়ে চিরবিদায় নিয়েছেন। বাবা আছেন, আমাদের বটবৃক্ষের মত ছায়া দিয়ে যাচ্ছেন, আমাদের ঐক্যবদ্ধ রাখতে নানান পরামর্শ দিচ্ছেন, ভুল-ত্রুটি ধরিয়ে দিচ্ছেন, উদার হওয়ার শিক্ষা দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত যে শিক্ষাটা আমাদের মা দিয়ে গেছেন মৃত্যুর পূর্ব মূহুর্ত পর্যন্ত। আমরা ভাই বোনেরা এখন বাবাকে ঘিরেই মিলে মিশে আছি, সবাই দোয়া করবেন যেন চিরদিন মিলে মিশেই থাকি।

আমার বাবা একজন প্রচার বিমূখ মানুষ। জীবণে কখনো দেখিনি কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করতে, কারো সাথে রূঢ় আচরণ করতে, কারো মনে ব্যাথা দিতে। একজন সাদামাটা, সহজ সরল, প্রচার বিমূখ, শান্ত, ভদ্র মানুষ হিসাবে আমার বাবা আমার কাছে একজন আদর্শ পিতা। একজন শিক্ষিত মানুষ হিসাবে যে যে গুণাবলী থাকা উচিত আমি আমার বাবার মধ্যে তা শত ভাগ দেখেছি। সন্তানের জন্য ভালোবাসা, পরিবারের জন্য ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধ, সমাজের জন্য উপকারী, নির্লোভ, নিরহংকার, সদালাপী, পরোপকারী এমন হাজারো গুণ উল্লেখ করতে পারি যা আমার বাবার মধ্যে বিরাজমান।


১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলনের সময়ে জেলায় জেলায় যে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে উঠেছিলো সেই আন্দোলনে আমার বাবাও একজন অংশিদার ছিলেন তাতে আমি আজ গর্বিত। ভাষা আন্দোলনের অংশগ্রহণকারী ভাষা সৈনিকদের নিয়ে দেশে তেমন একটা প্রচার প্রচারণা হয়না বললেই চলে। যা একটু প্রচার প্রচারনা বা মূল্যায়ন হয় তা ঐ ঢাকা কেন্দ্রীক ভাষা সৈনিকদের নিয়েই হয়। জেলা পর্যায়ে যারা আন্দোলনে, সংগ্রামে সমর্থন জুগিয়েছেন, মিছিল মিটিং করেছেন, গ্রেফতার হয়েছেন, গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির জন্য চেষ্টা করেছেন, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, পুলিশের রোষাণলে পড়েছেন এমন সৈনিকদের তেমন একটা কেউ মনে রাখেনি। আর জেলা পর্যায়ের ভাষা সৈনিকরা প্রচার বিমূখতার কারনে জাতি তাদের সম্পর্কে তেমন একটা জানেনও না। বর্তমানে ভাষা সৈনিক জীবিত আছেন এমন সংখ্যাও কম।

শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসন জেলার তেমনি জীবিত ভাষা সৈনিকদের খোজ খবর নেয়া শুরু করেছেন। ভাষা সৈনিকদের সম্মাননা দিচ্ছেন জেনে খুবই ভালো লাগলো। দীর্ঘদিন পরে হলেও ভাষা সৈনিকদের খোজ খবর নেয়া শুরু হয়েছে, মূল্যায়ন করছে, সম্মাননা দিয়ে সম্মানিত করছেন এটা একটা আশার কথা।

২০১৮ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী শরীয়তপুর জেলা প্রশাসন মহান ভাষা আন্দোলনের শরীয়তপুরের ভাষা সৈনিকদের সম্মাননা হিসাবে একটি ক্রেষ্ট ও পাঁচ হাজার টাকার প্রাইজবন্ড দিয়ে সম্মানিত করেছেন। আমার বাবা আবদুর রশিদ খান অসুস্থতা জনিত কারনে ২১ ফেব্রুয়ারী শরীয়তপুর জেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হতে সম্মাননা গ্রহণ করতে পারেননি। আজ ২৫ ফেব্রুয়ারী শরীয়তপুর জেলা প্রশাসনেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সেই সম্মাননা আমার হাতে তুলে দিলেন, খোজ খবর নিলেন কেমন আছেন ভাষা সৈনিক। বাবার পক্ষে সম্মাননা গ্রহণ করে আমি গর্বিত ও কৃতার্থ। একটি ক্রেষ্ট বা প্রাইজবন্ড বড় কথা নয়। সম্মান প্রদর্শনটাই সবচেয়ে বড় বিষয়। আমি গর্বিত আমি একজন ভাষা সৈনিকের সন্তান।


Saturday, February 24, 2018

পথের পদ্য-৩: শরীয়তপুরের পথে পথে-৩


প্রাণের শরীয়তপুর জেলা:
শরীয়তপুর জেলার ৬টি উপজেলার ঐতিহ্য সম্পর্কে কিছু তথ্য।

জেলার ঐতিহ্য

নদীমাতৃক পিছিয়ে পড়া জেলা শরীয়তপুরের রয়েছে বহু পুরোণো অনেক ইতিহাস ঐতিহ্য, যার কিছু নিচে আলোকপাত করা হলো:

ধানুকাঃ
চন্দ্রমনি ন্যায় থূষণ হরচন্দ্র চূড়ামনি মহা মহোপাধ্যায় শ্রীযুক্ত বামাচরণ ন্যায় প্রভৃতির জন্মস্থান ধানুকায়। এখানকার শ্যামমূর্তি জাগ্রত দেবতা বলে কিংবদন্তী আছে। অতীতে এখানে সংস্কৃত শিক্ষাকেন্দ্র ছিল
রাজনগরঃ
কীর্তিনাশা নদীতে নিমজ্জিত রাজা রাজবল্লভের বাসস্থান এখানে ছিল
ডোমসারঃ
এখানকার কুন্ডু পরিবার বিখ্যাত। রায় বাহাদুর খেতাব প্রাপ্ত নিত্যানন্দ কুন্ডু উপেন্দ্র লাল কুন্ড প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব। উপেন্দ্র লাল কুন্ডু পশ্চিম বাংলা সরকারের এককালীন মন্ত্রী ছিলেন বলে জানা যায়। ছাড়া সাড়া বাংলাদেশের প্রথম এম, গুরু প্রসাদ সেন এখানে জন্মগ্রহণ করেন
কোয়ারপুরঃ
রায়সাহেব রতন মনিগুপ্ত কোলকাতা হাইকোর্টের উকিল বৈকুন্ঠচন্দ্র দাসগুপ্তের জন্মস্থান

কুরাশিঃ
রাজা রাজবল্লভের বংশধরগণের কেউ কেউ এখানে বাস করেন বলে জানা যায়। বেশ কয়েকটি মন্দির শিবলিঙ্গ মূর্তি এখানে আছে

বুড়িরহাটঃ
বিখ্যাত হাট। এখানে বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। বেশ কয়েকটি পরিবারই এখানে বিশিষ্ট। পাশ্ববর্তী দেওভোগ গ্রামে বাংলাদেশের বিশিষ্ট চিত্র শিল্পী দেবদাস চক্রবর্তী- এর জন্মস্থান। তাঁর পুত্র গৌতম চক্রবর্তীও বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট চিত্র শিল্পী। এখানকার মসজিদ জেলার সর্বোৎকৃষ্টের মধ্যে একটি

রুদ্রকরঃ
বিশিষ্ট স্থান। এখানকার হিন্দুগণ দেশ বিভাগের পূর্বে বিশেষ ভুমিকা পালন করেন। এখানকার মঠ বিখ্যাত। প্রতি বছরই এখানে সাড়ম্বরে পূজা কীর্তন অনুষ্ঠান হয়ে থাকে

চিকন্দিঃ
বৃটিশ জমানা হতেই এখানে একটি দেওয়ানী আদালত প্রতিষ্ঠিত। একটি বিশিষ্ট জনপদ

মহিষারঃ
দক্ষিন বিক্রমপুরের এককালীন প্রখ্যাত স্থান। চাদঁরায়, কেদার রায়ের নির্দেশে এখানে পানীয় জলের জন্য কয়েকটি দিঘি খনন করা হয়েছিল বলে জানা যায়। প্রতি বছর পহেলা বৈশাখ হতে এখানে এক সপ্তাহের মেলা হয়। দিগম্বর সন্নাসীর মন্দির এখানে রয়েছে। সুপুসিদ্ধ নৈয়ায়িক গঙ্গাচরণ ন্যায় রত্বের বাসস্থান। এছাড়া স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী  বেশ কিছু ব্যক্তিত্বের জন্ম এখানে

লাকার্তাঃ
দেশব্যাপী প্রসিদ্ধি লাভকারী বিপ্লবী সিরাজ শিকদার, শিল্পী শামিম শিকদার, শিল্পপতি ব্যবসায়ী  মশিহুর রহমান শিকদার, নূরুল হক শিকদার, লুৎফর রহমান শিকদার, প্রখ্যাত সমাজকর্মী খান বাহাদুর খলিলুর রহমান শিকদার এখানে জন্মগ্রহণ করেন। গ্রামে কমপক্ষে ১৫ জন ডাক্তার, ১৫ জন ইঞ্জিনিয়ার,২৫জন প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা সহ প্রায় একশত স্নাতক স্নাতকোত্তর ডিগ্রি ধারী জাকুরিজীবী ব্যবসায়ী আছেন। এখানে বোশ কিছু পুরাতন ইমারত আছে যা অন্তত দুইশত বছরে স্মৃতি বহন করে

ছয়গাঁওঃ
ভেদেরগঞ্জ থানার অন্যতম বিশিষ্ট ঐতিহাসিক স্থান। ব্রিটিশ জমানায় গ্রামের বহু হিন্দু নেতা স্বাধীনতা সংগ্রামে উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রে\ছেন। ১৯৩০-৩৪ সালের দিকে সন্ত্রাস দমানের জন্য এখানে একটি বৃটিশ ক্যাম্প ছিল যেখানে বহু শিখ সেনা ব্রিটিশ সরকারের নির্দেশে মোতায়েন করা হয়েছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ছয়গাঁও বাংলা বাজার নামে একটি বিশিষ্ট জনপদ গড়ে উঠেছে। ইউনিয়নের সকল কার্যক্রম বর্তমানে বাংলাবাজার হাতে পরিচালিত হয়। খান বাহাদুর খলিলুর রহমান শিকদারের বাড়ি এখানেই অবস্থিত

দিগর মহিষখালীঃ
পাকিস্তান জমানার জাতীয় পরিষদ সদস্য (এম.এন.) বিশিষ্ট রাজনীতিক এডভোকেট জনাব আবদুর রহমান বকাউল এবং বাংলাদেশ সরকারের এককালীন আইজিপি (পুলিশ মহাপরিদর্শক) এবং ২০০৬ সালের তত্বাবধায়ক সরকারের অন্যতম উপদেষ্ট জনাব এম আজিজুল হকের জন্মভুমি। এখানে বিশিষ্ট জননেতা প্রাক্তন জাতীয় পরিষদ সদস্য জনাব আবিদুর রেজা খানও জন্মগ্রহণ করেন

মনুয়াঃ
বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব জনাব , মতিন খান, বিশিষ্ট সমাজকর্মী আজিজুল হক মল্লিক, ছয়গাঁও ইউনিয়নের বহু বছর চেয়ারম্যান পদে দায়িত্বপালনকারী জনাব আবদুল আজিজ ভুঞা আবদুল করিম মোল্লার জন্ম স্থান। এখানকার ঘোলপাড় বিখ্যাত

রামভদ্রপুরঃ
বিশিষ্ট স্থান, বর্তমান ভেদরগঞ্জ সদর  পৌরসভার অংশ। বিশিষ্ট কম্যুনিষ্ট নেতা শান্তি সেন এবং অরুনা সেনের বাসস্থান এখানে। পৌরসভার চেয়ারম্যান জনাব আবদুল হাই এর জন্ম স্থান। এখানকার কোকোলা মসজিদ অনুপম সৌন্দর্যের প্রতীক

ডামুড্যাঃ
বিখ্যাত নদী বন্দর ব্যবসা কেন্দ্র। বিশিষ্ট জননেতা এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক আবদুর রাজ্জাক এখানে জন্মগ্রহণ করেন। অপর সংসদ সদস্য জনাব আওরঙ্গজেব, উপমহাদেশের বিশিষ্ট বীমাবিদ জনাব খোদাব্ক্স, এককালীন সাংসদ জনাব ইঞ্জিনিয়ার ফারুক আলম ছাড়াও বহ গণ্যমান্য ব্যক্তি এখানে জন্মগ্রহণ করেন

কনেশ্বরঃ
জমিদার শ্রীযুক্ত কামাখ্যা চরন চট্রোপাধ্যায়ের বাসস্থান। ব্রিটিশ জমানা হতে এখানে একটি তহসিল অফিস আছে। বিশিষ্ট সমাজ কর্মী রাজনীতিক জনাব শেখ আলী আশরাফ এবং জননেতা সেলিম মিয়ার জন্মস্থান

সিভাড্যাঃ
শ্রীযুক্ত আশুতোষ ভট্রাচার্য শৈলেন্দ্র নাথ রায় আই.সি,এক কালীন পশ্চিম বঙ্গ সরকারের মূখ্য সচিব এখানকার সিভাড্যা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন গ্রামের চৌধুরী পরিবার বিখ্যাত

হাটুরিয়াঃ
এককালে স্টিমার স্টেশন ছিল। এখানকার কালিবাড়ি সখালুতলার দূর্গা প্রসিদ্ধ। কোলকাতার ঠাকুর বংশীয় জমিদার কালীকৃষ্ণ ঠাকুরের জমিদারি কাচারি এখানে এখন আছে। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সমাজকর্মী জনাব শামসুর রহমান (শাহজাদা মিয়া),ব্রিটিশ জমানার বিশিষ্ট মুসলিম জমিদার সেকান্দার আলী চৌধুরী তার পুত্র রওশন আলী চৌধুরীর জন্মস্থান। এখানকার জমিদার নওয়াব আলী চৌধুরী বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব

ধানকাঠিঃ
বহু কায়স্থ ভদ্রলোকের বাসস্থান। এখানকার কালী প্রসাদ রায় তার বগ্নী জাহ্নবী চৌধুরীর প্রখ্যাত ব্যক্তি। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সমাজকর্মী আবুল কালাম আজাদের জন্মস্থান

ইদিলপুরঃ
এককালের বিখ্যাত পরগণার নাম। এখানকার জমিদারগণ বাংলার বিশিষ্ট ব্যক্তি ছিলেন। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ কালী প্রসন্ন ঘোষ, সাধনা ঔষধালয়ের প্রতিষ্ঠাতা যোগেশচন্দ্র ঘোষের জন্মস্থান। বাংলার বিশিষ্ট কন্ঠ শিল্পী গীতা দত্তের পিতৃভূমি

লোনসিংঃ
পূর্বে লোনসিং একটি থানা ছিল। দেশখ্যাত বোশ কয়েকজন ব্যক্তিত্বের জন্মস্থান এই গ্রাম। এখানকার ডেপুটি বাড়ি বিখ্যাত। রায় বাহাদুর অভয় চরণ দাস, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃত কালাপানি ভোগকারী পুলিন বিহারী দাস, বৈজ্ঞানিক গোপাল চন্দ্র ভট্রাচার্য সহ এখানে জন্মগ্রহণকারী বেশ কয়েকজন ব্যক্তি তাদের কর্মকান্ডের জন্য সুখ্যাতি অর্জন করেছেন

সিরঙ্গলঃ
বারভূঞাদের প্রভাবকে নস্যাত করার মানসে সম্রাট আকবর তার পুত্র সেলিম (জাহাঙ্গীর) কে এখানে প্রেরণ করেছিলেন। তিনি এখানে একটি সেনানিবাস স্থাপন করেন। সেলিমের নামানুসারে গ্রামের নাম পূর্বে ছিল সেলিম নগর। পরে ইহা সিরঙ্গলে পরিণত হয় ঔপন্যাসিক আবু ইসহাকের জন্মস্থান। এর পাশেই সাতপাড় গ্রামে বিশিষ্ট চিকিৎসাবিদ, সমাজকর্মী এবং এককালীন জাতীয় পরিষদ সদস্য ডাঃ কে জলিল জন্মগ্রহণ করেন

কানুরগাঃ
কবি গোবিন্দ রায় তার ভ্রাতা বঙ্গ বিখ্যাত ঢাকা জজকোর্টের উকিল আনন্দ চন্দ্র রায় এর জন্মস্থান

মশুরাঃ
মহা মহোপাধ্যায় তারিনী চরণ শিরোমনীর জন্মস্থান। এখানে উপমহাদেশের বৃহত্তম শিবলিঙ্গ মূর্তি পাওয়া গেছে

ফতেজঙ্গপুরঃ
প্রাচীন নাম শ্রনগর। মুঘল সেনাপতি রাজ মানসিংহ যখন বিক্রমপুর আক্রমণ করেন তাখন তার সহযোগী যোদ্ধাগণ এখানকার রাজvাকদার রায় কর্তৃক পরাস্ত হয়ে শ্রীনগরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। মানসিংহ তাদেরকে উদ্ধারের জন্য তার সেনাবাহিণী প্রেরণ করেন। ফলে প্রচন্ড যুদ্ধ সংঘঠিত হয়। কেদার রায় যুদ্ধে আহত হয়ে মৃত্যমুখে পতিত হন। জয় চিহ্ন স্বরুপ মানসিংহ শ্রীনগরের নাম পরিবর্তন করে ফতেজঙ্গপুর রাখেন। ইহা বিখ্যাত জ্যোতির্বিদ মদন মোহন বিদ্যাভূষণের জন্মস্থান। এখানে নাককাটা বাসুদেবের প্রস্থর মূর্তি আছে

মগরঃ
প্রখ্যাত কবি গীতিকার অতুল প্রসাদ সেনের জন্মস্থান

রজানগরঃ
বৈদ্য প্রধান স্থান। ফরিদপুরের ইতিহাস লেখক আনন্দ চন্দ্র রায়, ঢাকার ইতিহাস লেখক যতীন্দ্র নাথ রায় ঢাকার বিশিষ্ট উকিল রাজনীকান্ত গুপ্ত এদের জন্মস্থান। এখানকার অভয়া শিবলিঙ্গ বিখ্যাত

শ্রীপুরঃ
পূর্বে চাঁদরায় কেদার রায়ের বাসস্থান ছিল

কেদারপুরঃ
কেদার রায় এখানে বাসস্থান তৈরী করতে চেয়েছিলেন। কিছু কাজ সমাপানান্তে তার মৃত্যু হওয়াতে উহ পরিত্যক্ত হয়। বাড়ির চতষ্পার্শ্বে যে পরিখা খনন করতে ছিলেন তার ভগ্নাবশেষ এখনও বিদ্যমান। ইহাকে কেদার রায়ের বাড়ির বেড় বলে

উপসীঃ
ব্রাক্ষণ জমিদার তারা প্রসন্ন ভট্রাচার্যের বাসস্থান। এখানকার উচ্চ বিদ্যালয়টি বেশ প্রাচীন নামকরা

ডিঙ্গামানিকঃ
গোলক চন্দ্র সার্বভৌম শ্রীযুক্ত কালি কিশোর স্মৃতি রত্ন মহাশয়ের বাসস্থান। এখানে রামসাধুর আশ্রম বিখ্যাত 

কার্তিকপুরঃ
পূর্বে একটি পরগনার নাম ছিল হোগলা। নামে যে স্থান পরিচিত তার প্রকৃত নাম হোগলী। প্রখ্যাত মুসলিম জমিদার চৌধুরী পরিবারের বাসস্থান। এক কালীন পূর্ব পাকিস্তান মন্ত্রী পরিষদের সদস্য আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিন আহমদ চৌধুরীর জন্মস্থান। জবু সম্ভ্রান্ত ব্রাক্ষণ বৈদ্যের বাসস্থান। বিশিষ্ট জমিদার মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, রায় বাহদুর রায়মোহন সেন শ্রীমন্ত কুমার দাস গুপ্ত এদের জন্মস্থান। শিল্পপতি শিক্ষানুরাগী জয়নুল হক শিকদার প্রাক্তন এমপি এম. রেজা এখানে জন্মগ্রহণ করেন

চরআত্রাঃ
বিখ্যাত স্থান। এখানাকার অনেক অঞ্চলই আজ প্রমত্তা পদ্মার গর্ভে বিলীন। ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক খান সাহেব উপাধিতে ভূুষত এবং পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাকাললীন সময়ের জাতীয় পরিষদ সদস্য খান সাহেব আবদুল আজিজ মুনশি এখানে জন্মগ্রহণ করেন। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ . কে এম ফজলুল হকের জন্মস্থান এখানেই

নওপাড়াঃ
বাংলাদেশ সরকারের সাবেক বাণিজ্য সচিব জনাব ফিরোজ আহমেদ এবং জর্দানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জনাব  গোলাম মোহাম্মদের জন্মস্থান। পদ্মা নদীতে বিলীন হওয়া এবং পরে আবার জেগে ওঠা একটি বর্ধিষ্ণু জনপদ

পাইকপাড়াঃ
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ আবুল ফারাহ মুহাম্মদ আবদুল হক ফরিদী এবং তাঁর যোগ্য সন্তান বাংলাদেশ সরকারের সাবেক কেবিনেট সচিব জনাব আতাউল ( জেলার একমাত্র সিএসপি) এর জন্মস্থান

মোক্তারের চরঃ
বিশিষ্ট রাজনীতিক বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের বিশিষ্ট ছাত্রনেতা সাবেক পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের এম,এস,, ডাঃ গোলাম মাওলার জন্মস্থান

সুরেশ্বরঃ
দেশখ্যাত স্থান। স্থানের নামে সবজি ডাটা আছে। প্রাচীন নদীবন্দর। এখানকার বিখ্যাত পীর জান শরীফ মাজারে প্রতি বছর শীতকালে ওরস হয়

মূলফতগঞ্জঃ
বিখ্যাত বন্দর হাট। বিশিষ্ট রাজনীতিক সমাজকর্মী জনাব আবদুল করিম দেওয়ান (মনাই দেওয়ান) এর জন্মস্থান

বাহের দিঘীর পাড়ঃ
বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা জাতীয় সংসদের সদস্য কর্ণেল শওকত আলীর জন্মস্থান

কলুকাঠিঃ
বিশিষ্ট রাজনীতিক বাংলাদেশ সরকারের প্রাক্তন  প্রতিমন্ত্রী জনাব টি,এম গিয়াসউদ্দিন এবং বিশিষ্ট চার্টার্ড একাউনেটেন্ট জনাব মোঃ সাইদুর রহমান, এনবিআর এর সাবেক সদস্য (কর) জনাব , এস. জহির মোহাম্মদ , ডাঃ আলমগীর মতি প্রমুখ এর জন্মস্থান

বিলাসপুরঃ
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এককালীন পূর্বপাকিস্তান  প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য জনাব আবদুর রশিদ খলিফার জন্মস্থান। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ ইউনুস খলিফা এখানে জন্মগ্রহণ করেন

কবিরাজ কান্দিঃ
বিশিষ্ট রাজনীতিক প্রাক্তন জাতীয় সংসদ সদস্য আমিনুল ইসলাম দানেশ মিয়ার জন্মস্থান

বড় মুলনাঃ
বিশিষ্ট পোষাক শিল্প কারখানার মালিক, রাজনীতিক ব্যবসায়া জনাব মোবারক আলী শিকদারের জন্মস্থান

বড় গোপালপুরঃ
বিশিষ্ট রাজনীতি জনাব মাষ্টার মজিবুর রহমান এবং দেশের বিশিষ্ট নির্মাত প্রতিষ্ঠান মেসার্স মাসুদ এন্ড কোং এর ম্যানেজিং ডাইরেক্টর জনাব মাকসুদুরল হক সিরাজী মাসুদ এর জন্মস্থান

মাঝির ঘাটঃ
ঢাকা-শরীয়তপুরের গেট ওয়ে। মাওয়া হতে সকল স্পীটবোট, লঞ্চ, ফেরি, ট্রলার এখানে এসে ভিড়ে। একটি ব্যস্ত নদী বন্দর