ভালবাসি প্রকৃতি

ভালবাসি প্রকৃতি

Sunday, June 7, 2009

পরিবেশ বাঁচান দেশ বাঁচান ।। নদী বাঁচাও পরিবেশ বাঁচাও ।। বাঁধ এখন সকলের মরন ফাঁদ


একটি বাঁধ যখন হাজার হাজার মানুষের জন্য মৃত্যু ফাঁদ হয় তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না।

শরীয়তপুর জেলা সদর উপজেলা থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দুরে ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার আনন্দবার সংলগ্ন পদ্মাকে বাঁধ দিয়ে আনন্দ বাজার সংলগ্ন সাধারণ মানুষকে পানি উন্নয়ন বোর্ড, শরীয়তপুর আনন্দ দিতে না পারলেও বেদনা দিয়েছে এটা সাধারণ মানুষের কথাতেই প্রমান মিলে। তবে হ্যা, দু’একজন মানুষকে যে আনন্দ দিয়েছে তাও সাধারণ মানুষের ক্ষোভে ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজে প্রমান পাওয়া যায়।

বহু বিতর্কিত সেই বাঁধ দেখার লোভ সামলাতে না পেরে বন্ধু দৈনিক যুগান্তর, বাংলাভিশন ও বিডি নিউজের শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধি কে এম রায়হান কবীর সোহেল ও ছোট ভাই দৈনিক আমাদের সময়ের জেলা প্রতিনিধি এ বি এম মামুনকে নিয়ে মোটর বাইকে রওয়ানা দিলাম। সেখানে পৌছে দেখি পদ্মার শাখা নদীর উপর বিশাল বাঁধ দিয়ে প্রমত্তা পদ্মার শাখাকে আড়াআড়িভাবে আটকে দেয়া হয়েছে। পূর্ব-পশ্চিমে দেয়া এই বাঁধের কারনে পদ্মা এখন মরা। বাধের দক্ষিনে ও উত্তরে প্রায় নদীর অনেকখানি জায়গা ড্রেজিং করে ভরাট করে ফেলা হয়েছে। নদীতে হাটু পানি। আমাদের এলাকায় খল্লা মাছ নামে পরিচিত এক প্রকারের মাছ হাটু পানিতে খেলায় রত। মরা নদীর বুকে (মরা বলা ঠিক হবে না বলবো মেরে ফেলা নদী) কয়েকটা ভাঙ্গা ট্রলার ও নৌকা পড়ে আছে।


একটা বাঁধ নদীর উপর দিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে নদীর পূর্ব পারের মানুষ এখন সব সময় হেটে পশ্চিম পারে আর পশ্চিম পারের মানুষ পূর্ব পারে আসতে পারবেন। এটা অত্যন্ত সুখের কথা। এটাই হওয়া উচিত বলে মনে করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা! কিন্তু পরিবেশ? পরিবেশ, জীব বৈচিত্র, পরিবেশ-প্রতিবেশ, পানির সাভাবিক প্রবাহ, স্থানীয় ব্যবসা বাণিজ্য, সাধারণ মানুষের ফসলি জমি ও ঘরবাড়ির কথা একবারও চিন্তা করলেন না তারা!!!

স্থানীয় সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে ঘটনার মূলে গিয়ে জানাযায়, বাঁধের দক্ষিণ প্রান্তে বাড়ি এক সেনা কর্মকর্তার। প্রবাহমান পদ্মা এই সেনা কর্মকর্তার বাড়ি ভেঙ্গে ফেলবে! এই অপরাধে পরিবেশ প্রতিবেশের দিকে না তাকিয়ে ঐ সেনা কর্মকর্তার ও প্রভবশালীদের বাড়ি রক্ষা করার জন্য একটি নদী মেরে বাঁধ করা হলো। এর সাথে আছে আমাদের দেশের শীর্ষ স্থানীয় আর নিম্ন স্থানীয় দুই ধরনের রাজনীতিবিদদের হাত। আমাদের দেশের পরিবেশ আন্দোলনকারীরা এই বেলায় চুপ চাপ থাকলো কেন তা বোঝা গেল না।

সাধারণ মানুষের কথা, এই বাঁধের কারনে বর্ষা মৌসুমে যখন পানি বৃদ্ধি পাবে তখন তীরের বাড়ি ঘর সহজেই তলিয়ে যাবে। আবার যখন পানি টান দেবে তখন পানি আটকে ফসলি জমি পতিত থাকবে।

স্থানীয় ব্যবসা বাণিজ্য সব বন্ধ। আনন্দ বাজারের ব্যবসায়ীদের মনে আনন্দ নাই। নদীর জন্য বেদনা, ব্যবসার জন্য বেদনা, পরিবেশের জন্য বেদনা। তারা বাঁধ চায় না। তারা চায় সেতু হোক। হেটে নদী পার হওয়ার ইচ্ছা বা অভিলাশ তাদের নেই। আনন্দ বাজার ঘাটে শত শত ট্রলার ভীরতো। ব্যবসা বাণিজ্য চলতো। এখন সব বন্ধ।
তাই এই বাঁধ এখন সকলের মরন ফাঁদ!!!!!

No comments:

Post a Comment