ভালবাসি প্রকৃতি

ভালবাসি প্রকৃতি

Wednesday, May 30, 2018

মাদক মুক্ত সমাজ গড়ার সহজ পদ্ধতি।। প্রয়োজনে রেশন প্রথা চালু করুন!!!

বর্তমান সমাজে একটি বিষয় নিয়ে বেশ অস্থিরতা চলছে। সবাই মাদক নির্মূলে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বিষয়টা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। মাদক নির্মূলে যুদ্ধ বিগ্রহের কোন প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয় না। অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ভাবেই এই সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব। শুধু প্রয়োজন প্রশাসনের আন্তরিকতা এবং জনগণের একান্ত আন্তরিক সহযোগীতা।
আমাদের দেশে বহুল পরিচিত মাদকের মধ্যে আছে গাজা, ইয়াবা, ফেন্সিডিল, হেরোইন, মদ, বিয়ার ইত্যাদি। তবে মদ বিয়ার একটু অভিজাত মাদক। কারন এটা যেহেতু লাইসেন্সধারী ব্যক্তিরা বিক্রি করতে পারে এবং লাইসেন্সধারীরা সেবনও করতে পারে তাই এটাকে মাদকের তালিকায় ফেলে লাভ কি? যাহোক, যে বিষয়ে কথা বলছিলাম সে বিষয়ে যাই।
আমরা যদি মাদক মুক্ত সমাজ গড়তে চাই তবে প্রশাসন বা দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা আন্তরিকতার সাথে স্বস্ব এলাকায় কারা মাদক সেবন করে তাদের খুজে বের করতে পারেন। মাদক সেবীদের সম্মানের সাথে ধরে এনে প্রয়োজনে মাদক খাইয়ে এবং বিশেষ প্রয়োজনে চাপ ও ভয় প্রয়োগ করে তাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন যে, তারা কোথা থেকে মাদক সংগ্রহ করেন।
প্রাথমিক ভাবে পাওয়া যাবে তারা কোথা থেকে মাদক সংগ্রহ করেন। এর পর একটু আন্তরিকতার সাথে সেই মাদক বিক্রেতাদের ধরতে পারেন। তাদের ধরে তথ্য সংগ্রহ করুন তারা কোথা থেকে মাদক আনেন। এতে কর্মকর্তা বা কর্তৃপক্ষ খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে পেয়ে যাবেন তাদের কাছে কারা সরবরাহ করে সেই তথ্য। এবার খুচরা বিক্রেতাদের সরবরাহকারীদের ধরে তাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে তাদের মূল ডিলার বা সরবরাহকারী কারা। এভাবে সেই মুল ডিলার ধরে খোজ নিতে হবে মূল ডিলাররা কোথা থেকে মাদক সংগ্রহ করেন। এভাবে পেয়ে যাবেন ডিলারদের কাছে সরবরাহকারী গডফাদারদের।
এবার গডফাদারদের ধরে খোজ নেন তারা কোন উৎস থেকে মাদক আনেন দেশে। কোন কোন রুট ব্যবহার করেন, কিভাবে আনে, সেই সম্পর্কে নানান তথ্য সংগ্রহ করে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ছিদ্রগুলো বন্ধে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করা।
আমার এই পদ্ধতি হচ্ছে অহিংস পদ্ধতি। নির্লোভ কর্তাব্যক্তিরাই পারে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে সমূলে মাদক নির্মূল করতে। এই পদ্ধতিতে যারা থাকবে তারা হতে হবে ধোয়া তুলসি পাতার চেয়েও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন। তবেই হবে দেশ মাদক মুক্ত। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি প্রশাসন আন্তরিক হলে দেশে একফোটা মাদকও থাকবে না।
কিন্তু আমার এ কথা অরণ্যে রোদন ছাড়া কিছুই না। আমি সেটা জানি। দেশে পুলিশ মাদক ব্যবসা হতে হপ্তা বা মাসোহারা তোলে, বর্ডারের দায়িত্বে থাকা কর্মীরা টাকার বিনিময়ে মাদকের চালান ছেড়ে দেয়। টাকার বিনিময়ে নিরাপদ আশ্রয়স্থল জেলখানায়ও মাদক সহজলভ্য। নিরপরাধ মানুষকেও টাকার বিনিময়ে মাদক দিয়ে ফাসিয়ে দেয়া হয়, ক্রসফায়ার দেয়া হয়।
যারা পুরাতন ইমারতের কোনায় বসে মাদক সেবন করে তাদের ধরতে ব্যস্ত হই। অথচ বড়বড় কর্তাব্যক্তিরা, সমাজের উচু স্তরের লোকেরা নিভু নিভু আলো জ্বালিয়ে টেবিলে টেবিলে চিয়ার্স ধ্বণি দিয়ে মদ বিয়ার খায় তাদের কোন দোষ নেই। দু’পেগ গলায় ঢেলে যারা মাদক নির্মূলে যায় তাদের দিয়ে কি মাদক নির্মূল হবে। স্বচ্ছ সমাজ গঠনে প্রয়োজন স্বচ্ছ নাগরিক, স্বচ্ছ দায়িত্বশীল কর্মকর্তা, প্রশাসন আমাদের তা আছে কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল নয় কি?
ইয়াবা, গাজা, ফেনসিডিল, হেরোইন সহ অন্য মাদকগুলো যেহেতু বেশি ভয়াবহ তাই মদ ও বিয়ার সহজলভ্য করা উচিত! মদ ও বিয়ার যেহেতু পান করলে কোন সমস্যা নাই তাই নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির লোকদের জন্য যোগ্যতা অনুসারে এগুলো খাওয়ার অনুমতি প্রদান করলে আর লুকোচুরি থাকবে না। ঢাকায় যারা মদ ও বিয়ার খাচ্ছে তাদের কি কোন ক্ষতি হচ্ছে না? মদ ও বিয়ার নেশার দ্রব্য। নেশা খাবি খা, মইরা যাবি যা। যেমন সিগারেট ক্ষতিকর এ সত্য প্রতিষ্ঠিত জেনেও সরকার সারা দেশে বিক্রি অবাধ করেছে তেমনি মদ ও বিয়ার অবাধ করে দিক! এক্ষেত্রে বিপুল রাজস্ব আহরণের সুযোগ হবে। মোটা টাকা কর ধার্য করে বাজারে ছেড়ে দিলে যার টাকা আছে সেটা অবশ্যই বৈধ পথে রোজগার করা টাকা সেই টাকা দিয়ে সে খাবে। সরকার বিপুল রাজস্ব ঘাটতি পূরণ করবে এই খাত থেকে যেমনটা পুরণ হয় সিগারেট-তামাকজাত দ্রব্য থেকে। প্রয়োজনে রেশনের মাধ্যমে মদ-বিয়ার সরবরাহ শুরু করুক। আর যদি সিগারেট-মদ-বিয়ার এগুলোও ক্ষতিকর নেশা দ্রব্য বিবেচিত হয় তবে এগুলোও নিষিদ্ধ করা হোক। কোন নেশাদ্রব্যই থাকবে না সমাজে।
ক্রসফায়ার দিয়ে মাদক বন্ধ করা যাবে না। এটা আমি নিশ্চিত করে বলে দিতে পারি। নেশার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা মানে কোন কোন কর্তৃপক্ষকে টাকা কামানোর সুযোগ করে দেয়া ছাড়া আর কিছুই না। গ্রেফতারের পর কারো কারো কাছ থেকে টাকা নিয়েছে আবার কারো কারো কাছ থেকে টাকা নিয়েও ক্রসফায়ারে দিয়েছে এমন অভিযোগও পাচ্ছি। তাই আসুন মাদক নির্মূলে সক্রিয় কোন পদ্ধতি খুজে বের করি। সমাজকে মাদক মুক্ত করি।

No comments:

Post a Comment