ভালবাসি প্রকৃতি

ভালবাসি প্রকৃতি

Friday, June 3, 2011


শরীয়তপুরের রাজনীতি-০১ : আওয়ামীলীগ
শরীয়তপুরে আওয়ামীলীগে সুবিধাবাদীদের রাজত্ব!!

আসাদুজ্জামান জুয়েল, শরীয়তপুর
শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রমে বিরাজ করছে স্থবিরতা। বর্তমান কমিটির মেয়াদ দীর্ঘদিন আগেই শেষ হয়ে গেছে। নতুন কমিটি হচ্ছে না বলে দলীয় নেতা-কর্মীরা অনেকটাই নিষ্ক্রিয়। ফলে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ ঘোষিত কর্মসূচিগুলো দায়সারাভাবে পালন করা ছাড়া তেমন কোনো কর্মকাণ্ড চোখে পড়ে না।
জেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন ২০০৩ সালে জাজিরায় অনুষ্ঠিত হয়। ২০০৭ সালে কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও আর সম্মেলন হয়নি। কমিটি পুরনো হওয়ায় এবং দল ক্ষমতায় আসায় কমিটির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ ওঠে। শুধু জেলা আওয়ামী লীগ নয় ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ সহযোগী সংগঠনেরও মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে দীর্ঘদিন আগেই। তা ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রব মুন্সী শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হওয়ায় তিনি দলের কর্মকাণ্ডে মনোযোগ দিতে পারছেন না বলে মনে করে স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। এ ছাড়া দলীয় শৃঙ্খলা না থাকায় আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সদর উপজেলার পালং, আঙ্গারিয়া, চিকন্দীসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ একক প্রার্থী দিতে ব্যর্থ হয়েছে। সম্প্রতি টেন্ডারবাজিকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্র“পের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের রূপ নেয়। সংঘর্ষে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর হাওলাদার, সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি বিল্লাল শেখসহ দুই দফা সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হয়। শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে রয়েছে জামায়াত-প্রীতির অভিযোগ। পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাবেক জামায়াত নেতা বি এম ইউসুফের সঙ্গে পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেডের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অতিথি হওয়ায় শরীয়তপুরের জামায়াত নেতারা তাঁর কাছাকাছি আসার সুযোগ পান বলে অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের নেতারা। এ ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে স্থানীয় জামায়াত নেতার সঙ্গে সার্বক্ষণিক আড্ডা দেওয়ায় অনেক নেতা-কর্মী তাঁর প্রতি ক্ষুব্ধ।
শরীয়তপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল ফজল মাস্টার বলেন, একই এলাকায় বাড়ি হওয়ায় আমাদের সাধারণ সম্পাদক জামায়াত নেতার ঘরে বসেন, এটা আমরা ভালোভাবে দেখি না। নামমাত্র কর্মসূচি পালন করা হয়। নিবেদিত কর্মীরা সুবিধাবাদীদের চাপে নিষ্ক্রিয়।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এখন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচি চলমান। প্রতি ওয়ার্ড থেকে ২০০ সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে। সদস্য সংগ্রহ শেষে একে একে ওয়ার্ড-ইউনিয়ন-থানা সম্মেলন করে পরে জেলা সম্মেলন হবে। কেন্দ্র ঘোষিত বিভিন্ন দিবস পালনের মাধ্যমে আমরা নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত রাখছি।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র আবদুর রব মুন্সী বলেন, আমাদের দলে কোনো স্থবিরতা নেই। সেনা শাসিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে সারা দেশের রাজনীতি ওলটপালট হয়ে গেছে। ফলে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও কমিটি করা হয়নি। এখন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে নেতা-কর্মীরা ব্যস্ত থাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রম কম।
এ ব্যাপারে শরীয়তপুর-১ এর সংসদ সদস্য বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক বলেন, আমি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। আমার কাছে দলীয় নেতা-কর্মীরা যেমন আসবে, তেমনি অন্য রাজনৈতিক মতাদর্শের মানুষও আসবে, এটা স্বাভাবিক। কে বিএনপি, কে জামায়াত, একজন জনপ্রতিনিধির কাছে তা বড় ব্যাপার নয়। যাঁরা এসব অভিযোগ করেন, তাঁদের জন্যও আমার দরজা খোলা। সুতরাং এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন।

ছবির ক্যাপশন : শরীয়তপুর জেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়। যেখানে সবসময় নেতা-কর্মীদের পদচারনায় মুখোর থাকার কথা। কিন্তু শরীয়তপুর জেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়টি দেখলে বোঝার উপায় আছে এটা সরকার দলীয় জেলা কার্যালয়? জেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ের সামনে এভাবেই স্তুপ করা বালু, সুরকি। ছবি :আসাদুজ্জামান জুয়েল।

No comments:

Post a Comment